WELCOME TO MY BLOG "সনাতন বৈদিক ধর্ম" AND SEE SOMETHING NEW

Showing posts with label মূর্তি পূজা. Show all posts
Showing posts with label মূর্তি পূজা. Show all posts

Thursday, June 18, 2020

বেদে লক্ষ্মীর বর্ণনা

লক্ষ্মী- (লক্ষ দর্শনাঙ্কনয়োঃ)
এই ধাতু থেকে লক্ষ্মী শব্দ সিদ্ধ হয়।

য়ো লক্ষয়তি পশ্যতঙ্কতে চিহ্নয়তি চরাচরং জগৎ অথবা
বেদৈরাপ্তৈর্য়োগিভিশ্চ য়ো লক্ষ্যতে স লক্ষ্মীঃ সর্বপ্রিয়েশ্বরঃ'
.
অথাৎ যিনি সমস্ত চরাচর জগৎকে দেখেন, তা চিহ্নিত অর্থাৎ দর্শনীয় করিয়া নির্মাণ করেন অর্থাৎ যিনি শরীরে নেত্র ও নাসিকা, বৃক্ষের পত্র, পুষ্প, ফল, মূল, পৃথিবী ও জল(অগ্নি) আদি কৃষ্ণ রক্ত ও শ্বেত মৃত্তিকা পাষাণ চন্দ্র ও সূর্য্যাদি চিহ্ন রচনা করেন, তথা সকলকে দেখেন, তিনি সকল শোভার শোভা এবং যিনি বেদাদি শাস্ত্র বা ধার্মিক বিদ্বান যোগীদিগের লক্ষ্য অর্থাৎ দর্শনীয়, এই কারণে সেই পরমেশ্বরের নাম লক্ষ্মী।
.
বেদ আমাদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ, বেদ "বিদ্ ধাতু" থেকে এসেছে। 'বিদ্' ধাতুর চারটি অর্থ বর্তায়, যথাঃ-
.
১। বিদ্ জ্ঞানে
২। বিদ্ বিচরনে
৩। বিদ্ সত্যায়ম
৪। বিদ্ লাভে
.
নিম্নে আমি এই চারটি অর্থেই লক্ষ্মীর সাথে বেদ এর পারস্পরিক নিবিড় সম্পর্ক দেখানোর চেষ্টা করবো। সুধীগণ, আশাকরি বুঝে ও উপলব্দি করে পড়ার চেষ্টা করবেন।
.
প্রশ্ন হল লক্ষ্মী কোথায় থাকেন?

  • বেদ বলছে জ্ঞানীগনের বাণীতে লক্ষ্মী বিদ্যমান। কারণ-
১. জ্ঞানই হল বেদ এবং বেদই হল লক্ষ্মী! যেখানেই জ্ঞানীগণের জ্ঞান বিদ্যমান, সেখানেই লক্ষ্মী বিদ্যমান।
২. তিনি জ্ঞানীগণের সহিত বিচরন করেন। অর্থাৎ জ্ঞানীগণের জ্ঞান তথা বেদ যেখানেই বিচরণ করেন লক্ষ্মী সেখানেই বিচরণ করেন।
৩. তিনি ধীর বিদ্বান যেখানে মন দ্বারা সত্য বাণী বলেন সেখানেই থাকেন।
৪. এর ফলে লাভ হয় প্রকৃত মিত্রতা। থাকেনা কোন ভেদাভেদ, এটাই হল সত্যিকারে মিত্রতার সূত্র, সংগঠনের সূত্র, সংগঠিত থাকার সূত্র।
.
এখন লক্ষ্মী সম্পর্কীয় বেদ মন্ত্রের সহিত, বেদ যে ধাতু থেকে এসেছে সেই "বিদ্ ধাতুর" যে চারটি অর্থ ও মন্ত্রের সহিত পারস্পরিক যে সম্পর্ক রয়েছে তা আমি উপস্থাপন করেছি, এর সাথে আপনারা নিজেরাই লক্ষ্মীর পারস্পরিক সম্পর্ক উপলব্দি করে দেখুন। নিম্নে মন্ত্রটি দেওয়া হলঃ-
.
"সক্তুমিব তিতউনা পুনন্তো যত্র ধীরা মনসা বাচমক্রত।
অত্রা সখায়ঃ সখ্যানি জানতে ভদ্রৈষাং লক্ষ্মীর্নিহিতাধি বাচি।।
ঋগবেদ ১০।৭১।২.
.
সরলার্থঃ চালনী দ্বারা পরিস্কৃত সুক্তের সমান যেখানে ধীর বিদ্বান মন দ্বারা পবিত্র বাণী বলে সেখানে পরস্পর মিলে জ্ঞানের চর্চাকারী বিদ্বান # প্রকৃত মিত্রতাকে অনুভব করে। এদের বাণিতে কল্যাণময়ী লক্ষ্মী নিহিত হয়।" .

অর্থাৎ লক্ষ্মী আলাদা কোন দেবী নয়। বরংচ স্বয়ং পরমেশ্বরেরই একটা গুণবাচক নাম। আপনাকে যিনি বলেছে যে, আর্যরা লক্ষ্মীর উপাসনা করে না সে হয়তো সত্যিটা জানে না। অথবা জানলেও মিথ্যাচার করছে অর্থাৎ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য আর্যদের নামে মিথ্যা প্রচার করছে।৷
.
আশাকরি বুঝতে পেরেছেন, যদি বুঝে উঠতে পারেন তাহলে আমার ক্ষুদ্র এই নিবেদন সার্থক হবে বলে মনেকরি।
নমষ্কার

.

৩৩ কোটি দেবতার সন্ধানে


       


আমাদের সনাতন বৈদিক ধর্মে ৩৩ কোটি দেবতা সম্পর্কে অনেকেই বিভ্রান্ত হন । হিন্দুরা অনেকেই জানেনা ৩৩ কোটি দেবতা কোন কোন গুলোকে বলা হয়, অনেকেই আবার দুর্গা , কালী, মনসা ,গণেশ ,কার্তিক ইত্যাদি পৌরাণিক চরিত্র কে দেবতা মনে করে। তাই এই ৩৩ কোটি দেবতা বিষয়েই আমার আজকের এই পোস্টটি লেখা ।

👉 দেবতার অর্থ হলো যার দিব্য গুন আছে এবং যার দিব্য গুনের দ্বারা এই জীব জগৎ চলছে তাকেই দেবতা বলে যেমন - সূর্য ।
👉 দেবতার অর্থ ঈশ্বর গ্রহণ করা ভুল কারণ পরমেশ্বর সকল দেবতা কে চালিত করে এবং সকল দেবতারও দেবতা বলে পরমেশ্বর এর এক নাম মহাদেব ,

👉 আর আমাদের মধ্যে যে কোটি শব্দ নিয়ে বিভান্ত আছে তার অর্থ এখন করিবো , সংস্কৃতে কোটি শব্দের অর্থ প্রকার , যজুর্বেদ ১৪/৩১ মন্ত্র - "ত্রয়স্ত্রিংশৎত্রিশতা" এবং শতপথ ব্রাহ্মণ ১৪/৫ তেও ৩৩ দেবের ব্যাখ্যা দেওয়া আছে ।

👉 শুরুতেই বলে রাখি আমাদের ৩৩ দেবের মধ্যে শুধু একটি মাত্র চেতন দেবতা হল 'জীবাত্মা' বাদবাকি ৩২ টি দেবতাই হলো জড় বস্তু।


 বৃহদারণ্যক উপনিষদে‬ আছে..............................✍️

"অষ্টৌ বসব একাদশ রুদ্রা দ্বাদশদিত্যাস্ত একত্রিংশদিন্দ্রশ্চৈব প্রজাপতিশ্চ ত্রয়ত্রিংশা চিতি"

=|| বৃহদারন্যকোপনিষদ ৩/৯/২ ||=

অর্থাৎ - অষ্ট বসু , একাদশ রুদ্র , দ্বাদশ আদিত্য এই কয় জন মিলিয়া একত্রিশ এবং ইন্দ্র ও প্রজাপতি মিলিয়া তেত্রিশ দেব ।


"ত্রয়স্ত্রিং শতাস্তুবত ভূতান্য শাম্যন্ প্রজাপতিঃ
পরমেষ্ঠ্যধিপতিরাসীৎ"

=|| যজুর্বেদ ১৪/৩১ ||=

অর্থ : প্রকৃতির শাসক , প্রজার পালক সর্ব্বব্যাপক , সর্ব্বাধিপতি পরমাত্মার তেত্রিশ ভৌতিক দেব শক্তির অনুশীল কর ।

অর্থাৎ...................✍️

৮ বসু 

১১ রুদ্র 

১২ আদিত্য 

ইন্দ্র  ও

প্রজাপতি 

এই ৩৩ টি কে দেবতা বলা হয় ।

👉 ৮ বসু কাকে বলে ও কি কি ?

 উত্তর:- নিখিল পদার্থ এই সবের মধ্যেই আছে
তাই এদের বসু বলা হয় ।

অগ্নিশ্চ পৃথিবীশ্চ বায়শ্চান্তিরিক্ষং চাদিত্যশ্চ দ্যৌশ্চ চন্দ্রমাশ্চ নক্ষত্রাণি চৈত্রে বসব

=|| বৃহদারন্যকোপনিষদ ৩/৯/৩ ||=

অর্থ : অগ্নি, পৃথিবী, বায়ু, অন্তরিক্ষ, আদিত্য, দ্যুলোক ,চন্দ্র, নক্ষত্র সকল ইহারা অষ্ট বসু ।

অর্থাৎ ৮ টি বসু হইলো :

১ ) পৃথিবী 
২ ) জল 
৩ ) অগ্নি 
৪ ) বায়ু 
৫ ) আকাশ 
৬ ) চন্দ্রমা 
৭ ) সূর্য 
৮ ) নক্ষত্র সমূহ

👉 ১১ রুদ্র কাকে বলে ও কি কি ?

উত্তর : "দশমে পুরুষো প্রাণা আত্মৈকাদশন্তে"

=|| বৃহদারন্যকোপনিষদঃ ৩/৯/৪ ||=

অর্থ : পঞ্চ প্রাণ এবং পঞ্চ উপ প্রাণ এই দশ এবং এক জীবাত্মা মিলে একাদশ রুদ্র ।

অর্থাৎ একাদশ রুদ্র গুলো হল :

১ ) প্রাণ 
২ ) অপান 
৩ ) ব্যান 
৪ ) উদান 
৫ ) সমান 

৬) নাগ 
৭ ) কূর্ম 
৮ ) কৃকল 
৯ ) দেবদত্ত 
১০ ) ধনঞ্জয়
 
১১ )জীবাত্মা 

এই ১১টি দেহান্তকালে রোদন করে অর্থ্যাৎ এই ১১ টি সত্ত্বা যখন একটি মনুষ্যের দেহ থেকে বেরিয়ে যায় তখন সেই ব্যক্তির মৃত্যু হয় ফলে সবাই কান্না অর্থ্যাৎ রোদন করে ওঠে বলে ইহা দিগকে রুদ্র বলে  ।

👉 দ্বাদশ আদিত্য কাকে বলে ও কি কি ?

উত্তর : "দ্বাদশ বৈ মাস"

 =|| বৃহদারন্যকোপনিষদ ৩/৯/৫ ||=

অর্থ : বৎসরে বার মাস ১২ আদিত্য ।

অর্থাৎ : দ্বাদশ আদিত্য গুলো হল :

১ ) চৈত্র 
২ ) বৈশাখ 
৩ ) জৈষ্ঠ 
৪ ) আষাঢ় 
৫ ) শ্রাবন 
৬ ) ভাদ্রপদ 
৭ ) আশ্বিন 
৮ ) কার্ত্তিক 
৯ ) মার্গশীর্ষ 
১০ ) পৌষ 
১১ ) মাঘ 
১২ ) ফাল্গুন  

১২ টি আদিত্য : সংবৎসরের ১২ মাস সকলের আয়ু হরণ করে বলিয়া এই সকলকে আদিত্য বলে ।

👉 ইন্দ্র ও প্রজাপতি কি ? 

★ স্তনযিত্নুরেবেন্দ্রো

 =|| বৃহদারন্যকোওনিষদ ৩/৯/৬ ||=

অর্থাৎ বিদ্যুৎ হচ্ছে ইন্দ্র  ।

★ যজ্ঞঃ প্রজাপতিরিতি

=|| বৃহদারন্যকোপনিষদ ৩/৯/৬ ||=

অর্থ : যজ্ঞ ( অর্থাৎ শুভ কর্ম ) হচ্ছে প্রজাপতি 

পরম ঐশ্বর্য্য হেতু বলিয়া বিদ্যুতের নাম ইন্দ্র এবং প্রজাপতি অর্থাৎ যজ্ঞ, ইহা দ্বারা বায়ু ও বৃষ্টির জলের শুদ্ধি হয়ে থাকে, এর দ্বারা উত্তম অন্নাদি উৎপন্ন হয়।

[ এই হল আমাদের ৩৩ কোটি (প্রকার) দেবতা ]

👉 এখন বলুন এর মধ্যে কি দুর্গা কালি মনসা গণেশ ইত্যাদি পৌরাণিক কাহিনির যে অবাস্তব চরিত্র গুলোকে দেবতা ভাবেন সেগুলোকে কি পেলেন এখানে ?

( এই ৩৩ টি দেবতার উপাসনা করার কথা বেদাদী অর্থাৎ বেদানুকূল শাস্ত্রে কোথাও নেই কারণ আমাদের শাস্ত্র অনুযায়ী শুধু মাত্র নিরাকার ,অজন্মা, সর্বব্যাপক ,অবিনাশী , নিত্য ,অমর সেই পরমেশ্বরের উপাসনা করতে হবে ,অন্য কারো নয় । আজও হিন্দুরা দেবতা সম্পর্কে কিছুই না জেনে অনেকেই ভ্রম জালে পতিত হচ্ছে এবং তাদের এই দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে জন্মগত বমুনেরা )


👉 অনেক পন্ডিতেরা এখন আবার বলিতে পারে যে শিব , বিষ্ণু ইত্যাদি এরাও তো দেবতা কেননা এদের নাম বেদে আছে ।

তাদের উত্তরে আমি বলিব - না , শিব , বিষ্ণু  কোন দেবতা নয় ।  কারন শিব , বিষ্ণু হচ্ছে পরমাত্বার গুনবাচক নাম । যেমন - পরমাত্মা যখন মঙ্গলময় তখন তিঁনি শিব নামে পরিচিত । এবং যখন তাকে সর্বব্যাপী মনেকরি তখন তিনি বিষ্ণু 😃

👉 কোন কোন পন্ডিত আবার বলিবে তাহলে তো শিব ও বিষ্ণু পৌরানিক ও বিষ্ণুর চারহাত ও তিনি বৈকুন্ঠে থাকে আর শিব কৈলাশে থাকে হাতে তৃশুল থাকে মানে তারা দুজনেই আকার 😃

তাদের উত্তরে বলিব - না , কারন শিব ও বিষ্ণু নিরাকার তাদের কোন আকার নেই ( পৌরানিক যুগে ঈশ্বরের এই পবিত্র নামগুলি শিব বিষ্ণু ইত্যাদি নাম দিয়ে একেকটি দেবতা নামক চার হাত পাঁচহাত ওয়ালা এলিয়েন তৈরী করা হয়েছে )  কারন পরমাত্বা নিরাকার  যজুর্বেদ ৪০/৮ মন্ত্র মতে তিনি নিরাকার শরীর রহিত জন্ম রহিত মৃত্যু রহিত । তাই বুঝতে হবে যে শিব বা বিষ্ণু একই জন এবং তিনি নিরাকার পরমাত্বা ।

♥️ সত্যকে জানুন এবং মিথ্যা পরিত্যাগ করুন ♥️