WELCOME TO MY BLOG "সনাতন বৈদিক ধর্ম" AND SEE SOMETHING NEW

Thursday, June 4, 2020

হিন্দু শব্দের উৎপত্তি

     
    


"হিন্দু" শব্দ নিয়ে আজ এই পোস্ট সকল সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাই বোন দের কাছে । প্রাচীন কাল হতে এই "আর্য" শব্দের প্রচলন ছিল , কিন্তু হটাৎ করে কবে থেকে আমরা "হিন্দু" হয়ে গেলাম বা কোথা হতে এই "হিন্দু" কথাটির উৎপত্তি হল আজ সে বিষয় নিয়েই আমরা আলোচনা করবো শাস্ত্র প্রমান সহ । 

সবার প্রথমে "আর্য" কথাটি পরিষ্কার করে নেওয়া যাক । "আর্য" শব্দটি কোনো জাতি গত নাম নয় । "আর্য" হলো মানবের গুণগত অর্থাৎ গৌনিক নাম । আমাদের জাতি হল  একটাই তা "মনুষ্য" জাতি । "আর্য" শব্দের অর্থ হলো শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি , এর একটা সাধারণ প্রমাণ দিচ্ছি গীতা থেকে ।

⭕️ দেখুন শ্রী কৃষ্ণ অর্জুনকে কি বলছেন -

"কুতস্ত্বা কশ্মলমিদম্‌ বিষমে সমুপস্থিতম্‌ 
  অনার্যজুষ্টমস্বর্গ্যমকীর্তিকরমর্জুনঃ"

                                           গীতা - ২ / ২ শ্লোক 

ভাবার্থ : হে অর্জুন ! এই অসময়ে তোমার মধ্যে মোহ কোথা হইতে এলো ? শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা এমন আচরণ করেনা এবং এই মোহ স্বর্গ বা কীর্তি কোনোটিও প্রদান করেনা । 

( গীতা প্রেস ভাষ্য )

এখানে কৃষ্ণ অর্জুন কে অনার্য বলেছে অর্থাৎ  , কারণ অর্জুন কোনো ভাবেই তার আত্মীয়দের সাথে যুদ্ধ করতে চাইছে না যার কারণে কৃষ্ণ অর্জুন কে অনার্য অর্থাৎ অজ্ঞানী , আনাড়ি , মূর্খ বলছেন । অর্থাৎ "আর্য" আর "অনার্য" এই দুই হলো মানবের গুণগত নাম ।

⭕️ এখন বেদে পরমাত্মা কি বাণী দিয়েছে আর্য সম্পর্কে আসুন জেনে নিই সে বিষয়ে -

🔘 "কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম্"  - ঋগ্বেদ - ৯/৬৩/৫ মন্ত্র 
 
অর্থাৎ সমগ্র বিশ্বকে শ্রেষ্ঠ বা মহৎ করে তোলো




🔘 "আর্যা ব্রতা বিসৃজন্তো অধি ক্ষমি"  - ঋগ্বেদ - ১o/৬৫/১১ মন্ত্র




🔘 “বি জানীহ্যার্যান্যে চ দস্যবো বর্হিষ্মতে রন্ধয়া শাসদব্রতান্”  

                                                         - ঋগ্বেদ - ১/৫১/৮ মন্ত্র




⭕️ রামায়ণে দেখুন -

🔘 “সর্বদাভিগতঃ সদ্ভিঃ সমুদ্র ইব সিন্ধুভিঃ। 
    আর্যসর্বসমশ্চৈব সদৈব প্রিয়দর্শন।।” 

                                       বাল্মীকি রামায়ণ - ১/১/১৬ শ্লোক

অর্থাৎ , রামচন্দ্র সদাসর্বদা সৎপুরুষদের সাহচর্যে থাকতেন যেরূপ সমুদ্র সদা নদীসমূহের সাথে মিলে থাকে তথা তিনি আর্য, সমদর্শী ও সকলের প্রিয় ছিলেন ।




"আর্য" শব্দটি বেদাদী শাস্ত্রে অসংখ্য  জায়গায় পাবেন । 
কিন্তু কেউ কি আমায় "হিন্দু" শব্দটি একবার কোনো বেদ ,উপনিষদ, বেদান্ত,দর্শন , মনুস্মৃতি, ব্রাহ্মণ শাস্ত্র 
থেকে  দেখাতে পারবেন মিত্রগণ ?  
পারবেন না । 

এই ভারতে পূর্ব থেকেই বিদ্বান ঋষি মহর্ষিরা জন্ম নিয়েছে এবং তারা এখানে বসবাস করত বলে এই জায়গায় নাম ছিল "আর্যাবর্ত" অর্থাৎ 'আর্যদের নিবাস' । 
আসুন এইবার আলোচনা করি "আর্যাবর্ত" থেকে 
"ভারত", "হিন্দুস্তান" বা "ইন্ডিয়া" হলো কি ভাবে !

রাজা "ভরত" এর নাম থেকে সেই জায়গার নাম হয় "ভারতবর্ষ"। যখন মুঘলরা এলো তখন সেই জায়গার নাম হল "হিন্দুস্তান" এবং  ইংরেজরা আসার পরে নাম দিলো "ইন্ডিয়া"। যখন মুঘলরা এই দেশে রাজত্ব করা শুরু করে তখন তারা আমাদের উপর "জিজিয়া কর" লাগায় । "জিজিয়া কর" সম্পর্কে অনেকেই ইতিহাসে পড়েছেন । অমুসলিমদের কে যদি মুসলিম শাসন করে তাহলে সেই অমুসলিম কে "জিজিয়া কর" দিতে হবে এইটা কুরআনের বাণী ( ৯ সূরা আত তাওবাহ্.. আয়াত ২৯ ) তাই আমাদের কে চিহ্নিত করার জন্য আমাদের নাম দেওয়া হয় "হিন্দু" , অর্থাৎ আমাদেরকে তখন "হিন্দু" বলে ডাকতো । যেহেতু মুসলিমদের দেওয়া নাম এই "হিন্দু" সেহেতু তাদের হিসেব মতোই এই নামের অর্থ তারাই দিয়েছে । 

আপনারা যদি "হিন্দু"-র অর্থ উর্দু , ফারসি , আরবি ভাষার মধ্যে খুঁজতে যাও তাহলে এর অর্থ মিলবে - 'চোর' , 'লুচ্চা' , 'ডাকাত' , 'মাতাল' , 'দাঙ্গাবাজ' , 'কালো' , 'শয়তান' , 'কাফের' । এর থেকে আর খারাপ কিছু অর্থ নেই । ডিকশনারীর নাম বলে দিচ্ছি - "Gayas-ul-Lughat" ফারসী ডিক্শনারী , "Kareem-ul-Lughat" আরবি ডিকশনারি , "Feroz-ul-Lughat" ঊর্দু ডিকশনারি , এগুলোতে পেয়ে যাবেন  "হিন্দু" শব্দের অর্থ কি । যতটা খারাপ বলা যায়, 'ঘৃণাবাচক' শব্দ একটা এই "হিন্দু"। মোঘলরা আমাদের নাম "হিন্দু" দিয়েছে আর আমরা সেটা গ্রহন করেছি । কেউ আমাদের বা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে চোর , ডাকাত , মাতাল , দাঙ্গাবাজ প্রভৃতি বলছে আর এটা শুনে কি আমাদের গর্ব হচ্ছে নাকি অসম্মান হচ্ছে একটু ভেবে দেখবেন মিত্রগণ । 

কিন্তু আমরা কখনোও ভেবে দেখিনি সেটা কে । আমরা গলার মালা করে নিয়েছি । তবুও দেখুন কিছু বিদেশি জানোয়ার ঐতিহাসিক এবং আমাদের এই হিন্দুরা আর একটা কারণ তৈরি করেছে এই "হিন্দু" নামের দেখুন এদের মূর্খতা ।

আমিও একসময় অজান্তে এইটা ভাবতাম .. 
"হিন্দু" নাকি তাদের বলা হয় যারা সিন্ধু নদীর তীরে বসবাস করতো । মুসলিমরা নাকি সিন্ধু বলতে পারতো না তাই "হিন্দু" বলতো , যেমন আমরা ৭ দিন কে "সপ্তাহ" বলি আর  মুসলিমরা বলে "হপতা"। আর আমাদের মূর্খ পূর্ব-পুরুষরা ভাবতো ওদের "" উচ্চারণ হয় না । "" উচ্চারণ করতে গেলেই বোধ হয় ওদের "" উচ্চারণ হয়ে যায় । যদি তাই মেনে নিই তবে একটা প্রশ্ন থেকেই যায় - "সিন্ধু" থেকে যদি "হিন্দু" হয় তাহলে আজ পর্যন্ত "সিন্ধু" নদীর নাম কি "হিন্দু" নদী হয়েছে ? কেন হয়নি ? 

আচ্ছা আবারও মেনে নিলাম ওদের ভাষাতে '' নেই তাহলে "ফারসী" শব্দ কিভাবে হবে ? "ফারহী" হবে তো তাই না মিত্রগণ ? "মুসলমান" থেকে "মুহলমান" তো ? কিন্তু আজ পর্যন্ত কি তাই হয়েছে ? 

এই হলো আমাদের সমস্যা 😃 আমরা সত্যকে কেউ মানতেই চাইনা, যুক্তি দিয়ে কেউ বুঝতেই চাই না কোনো বিষয়  😃 অন্ধের মতো শুধু ভুল গুলোকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছি 😃

উপরিউক্ত ☝️এই তথ্য বা কথা গুলো একটাও আমার বলা নয় , এই কথা গুলো যিনি বলেছেন তার নাম হলো "পন্ডিত মহেন্দ্র পাল আর্য" , সনাতন ধর্ম সম্পর্কে যে যে বেশি চর্চা করেন তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি খুব কম পাওয়া যায় যিনি এই "মহেন্দ্র পাল" জী কে চেনেন না । যে "মহেন্দ্র পাল" জী আগে মুসলিম ছিলেন, তার পূর্ব নাম ছিল "মেহবুব আলি"। তিনি উত্তর প্রদেশের এক মসজিদের ইমাম ছিলেন তারপর তিনি মহর্ষি দয়ানন্দ জীর "সত্যার্থ প্রকাশ" গ্রন্থটি পড়ে সে ইসলামের সমস্ত ভুল ভ্রান্তি গুলোকে জানতে পারেন তারপর তিনি সনাতন বৈদিক ধর্ম কে গ্রহণ করেন , এই মহেন্দ্র পাল আজও ইসলাম কে মিথ্যা প্রমান করছে কুরআনের বাণী দ্বারা , দিনের পর দিন কোনো মুসলিমই এখন তার সাথে ডিবেট করতে চায় না ভয়ে । সনাতন বৈদিক ধর্মে মহেন্দ্র পালের মতো কুরআন সম্পর্কে কেউ এতো ভালো জানেন না । সেই মহেন্দ্র পাল জীর এই তথ্য টি দিয়েছি নিচের link এ ।  এই link এ click করুন আর দেখুন তিনি এই "হিন্দু" শব্দের ব্যাখ্যা দিয়েছেন কতো সুন্দর ভাবে । 
নিচের "মহেন্দ্র পাল আর্য ভিডিও"তে click করুন
ভিডিও টি দেখার জন্য 👇👇


এই সমস্ত তথ্য জানার পরও অনেক সনাতনী ভাই জোর গলায় বলে যে আমরা হিন্দু ! আমি সেই সমস্ত ভাইদের প্রশ্ন করতে চাই যে - আপনারা কেন হিন্দু ? সেই ভাই উত্তরে অবশ্যই বলবেন যে - "হিন্দু" বলে আমাদের ডাকা হতো তাই আমরা "হিন্দু"। আপনাদের "হিন্দু" বলে কারা ডাকতো ? নিশ্চয় আমরা নিজেই নিজেকে হিন্দু বলতাম না ? অবশ্যই অন্য কোনো দেশের ব্যক্তিগণ আমাদের "হিন্দু" বলতো ? তাহলে আপনারা এইটাই প্রমাণ করছেন যে আপনারা লোকের দেওয়া নামকেই বেশি গুরুত্ব দেন । আমি এইটাই ভাবছি যে আজ যদি ভিন্ন দেশের ব্যক্তিরা আমাদের পাগল , অজ্ঞানী , অসভ্য বলে ডাকতো তাহলে ঠিক "হিন্দু" শব্দের মতোই এই শব্দ গুলোকেও গুরুত্ব দিতেন তাই না ? বিষয় টি ভেবে দেখবেন মিত্রগণ ।  আমাদের সমস্ত শাস্ত্র বলছে আমাদের গুনগত নাম "আর্য" বারবার বলা হয়েছে , কিন্তু আমরা আজ নিজেকে "হিন্দু" বলতেই ব্যস্ত  , "হিন্দু" নাম হওয়ার পর থেকে আমরা বেদাদী শাস্ত্র চর্চাকেও বাদ দিয়ে দিয়েছি , আজ হিন্দু সমাজ সনাতন বৈদিক ধর্মের শাস্ত্র থেকে অনেক টা দূরে আজ আমরা শাস্ত্র কে ভুলে কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাসকে এখনও আমাদের ধর্মে স্থান দিয়ে রেখেছি । 


                                "ওঁম শান্তি শান্তি শান্তি"


                                      🙏 নমস্তে 🙏

                                             

5 comments:

  1. ধন্যবাদ দাদা আপনাকে

    ReplyDelete
  2. কি অার বলব দাদা তোমার মাথায় গোমাংস না গোমুত দিয়ে ভরা একমাত্র তিনি জানেন 😄😄😄
    মহেন্দ্র পাল মুসলিম ছিল ভালো কথা ওদেরই মতো লোকজন ইসলাম ত্যাগ করে কারন ইবলিশ শয়তান ৭০হাজার বছর আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করার পরেও শয়তান হয়েছে 😄😄😄 কিছু মানুষ কে উনি হেদায়েত দেন না😃😃 অার কোরঅানে কোনো ভুল নেই কিছু ভুলের কথা শুনা যায় বটে কিন্তু সাহস করে বলতে পারলে না
    অামারা অমুসলিমরা ভুল খুঁজে বের করেছি।😀😀 কোরঅানে ভুল গুলো মুসলিম রা বের করার চেষ্টা করেছে কোন অমুসলিম পারে নি😀😀 এই অসত্য গুলো র জবাব দেওয়ার জন্য জাকির নায়েক কে আল্লাহ তৈরি করেছে অার তোমার মতো অশিক্ষিত জানোয়ার রা তাকে দেশ থেকে ভাগিয়ে দিলে?কিসের এতো ভয় শুনি?😃😃😃

    ReplyDelete
    Replies
    1. না ৭২ হুর, কন্টাক্ট ম্যারেজ, রিজিয়া কর, কাফের এ গুলো কি ভুলের মধ্যে না

      Delete
  3. আরবি ফার্সি বা উর্দু ভাষা অনুযায়ী হিন্দু কথাটা যদি গালাগালি হয়ে থাকে তবে হিন্দু ধর্মকে সিন্ধু ধর্ম বলা যেতেই পারে।এটা আমার নিজস্ব মত।ধর্ম সম্বন্ধে আমার আদৌ কোন জ্ঞান নেই। কাজেই আমার ধৃষ্টতা
    ক্ষমা করবেন

    ReplyDelete